তাকদীর এটাই প্রমাণ করে যে ইসলাম যে পরীক্ষার ধারণা আছে সেটা হলো জাস্ট সাজানো একটা পরীক্ষা। সবকিছু আগে থেকেই ফিক্সড। বান্দাদের অভিযোগ থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহ পরীক্ষার নাটক সাজিয়েছেন। (যদিও এতেও বান্দাদের অভিযোগ থেকে বাঁচা সম্ভব নয়।) কুরআন হাদিসের রেফারেন্সগুলো থেকে এই বিষয়টা খুবই ক্লিয়ার হয়।

কুরআন থেকে রেফারেন্স:

১. সুরা ৮১ (তাকভীর) : আয়াত ২৯
“আর তোমরা ইচ্ছা করতে পার না, যদি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ ইচ্ছা না করেন।”

২. সুরা ২৮ (ক্বাসাস) : আয়াত ৬৮
“তোমার প্রতিপালক যা ইচ্ছে সৃষ্টি করেন আর যাকে ইচ্ছে মনোনীত করেন। এতে তাদের (মানুষের) কোন এখতিয়ার নেই, আল্লাহ পবিত্র, মহান।” (তাইসিরুল কুরআন)

৩. সুরা ৬ (আনআম) : আয়াত ৩৯
“আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা হিদায়াতের সরল সহজ পথের সন্ধান দেন।”

৪. সুরা ১৮ (কাহাফ) : আয়াত ১৭
“আল্লাহ যাকে হিদায়াত দেন বা সৎপথে পরিচালিত করেন, সে হেদায়াতপ্রাপ্ত। আর যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন, তুমি কখনও তাহার জন্য পথনির্দেশকারী কোন অভিভাবক পাইবে না।”

৫. সুরা ৭ (আরাফ) : আয়াত ১৭৮
“আল্লাহ যাকে হিদায়াত দেন সেই হিদায়াত লাভ করে, আর যাকে পথভ্রষ্ট করেন তারাই হয় ক্ষতিগ্রস্ত।”

৬. “সুরা ৬ (আনআম) আয়াত ১২
এভাবে আমি প্রত্যেক নাবীর জন্য মানুষ আর জ্বীন শয়তানদের মধ্য হতে শত্রু বানিয়ে দিয়েছি, প্রতারণা করার উদ্দেশে তারা একে অপরের কাছে চিত্তাকর্ষক কথাবার্তা বলে। তোমার প্রতিপালক ইচ্ছে করলে তারা তা করত না, কাজেই তাদেরকে আর তাদের মিথ্যে চর্চাকে উপেক্ষা করে চল।”

৭. সুরা ৫৮ (মুজাদালাহ) : আয়াত ১০
“আল্লাহর অনুমতি বা ইচ্ছা ছাড়া শয়তান তাদের (মুমিনদের) সামান্যতম ক্ষতি সাধনেও সক্ষম নয়।”

৮. সুরা ৭৬ (ইনসান) : আয়াত ৩০
“আর আল্লাহ ইচ্ছা না করলে তোমরা ইচ্ছা করবে না; নিশ্চয় আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রাজ্ঞ।”

৯. সুরা ৬৫ (তালাক) : আয়াত ৩
“আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেনই; আল্লাহ সব কিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা।”

১০. সুরা ৫৪ (ক্বমার) : আয়াত ৪৯
“প্রকৃতপক্ষে প্রতিটি বস্তুকেই তাকদীর অনুযায়ী সৃষ্টি করা হয়েছে।”

১১. সুরা ৩৯ (যুমার) : আয়াত ৬২
“আল্লাহ সব কিছুর স্রষ্টা আর তিনি সব কিছুর অভিভাবক এবং কর্ম সম্পাদনকারী।” (তাইসিরুল কুরআন)

১২. সুরা ৫৭ (হাদীদ) : আয়াত ২২
“পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যেসব বিপর্যয় আসে সেগুলো সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে।”

১৩. সুরা ৩ (ইমরান) : আয়াত ৬
“তিনিই মাতৃগর্ভে তোমাদেরকে আকৃতি দান করেন যেভাবে তিনি চান।” 

১৪. সুরা ১৪ (ইব্রাহিম) : আয়াত ২৭
“আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন।”

[এরপরও অনেকে ব্যাখ্যা জানতে চাইতে পারে, আর আমরা জানি যে কুরআনের সবচেয়ে বড় ব্যাখ্যা হচ্ছে সহিহ হাদিস। নিম্নে উল্লেখিত সহিহ হাদিসগুলো পড়ার পর আপনারা এই বিষয়ে একদম ক্লিয়ার হয়ে যাবেন।]

সহিহ হাদিস থেকে রেফারেন্স :

১. সৃষ্টির পূর্বেই সবকিছু লিখে রাখা হয়েছে :
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=37513

আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিকূল সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর আগে সৃষ্টিকূলের তাকদীর লিখে রেখেছেন।
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=18830

২. ভাগ্যে যা লিখা আছে তা পরিবর্তন হবে না :
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=54674

৩. সন্তান পিতার মেরুদণ্ডে অবচেতন থাকতেই কে জাহান্নামে আর কে জান্নাতে যাবে তা নির্ধারিত হয়:
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=9792

আল্লাহ পাক আদমকে সৃষ্টি করার পরে তার পিঠ থেকে জান্নাতী এবং জাহান্নামী মানুষকে বের করেছিলেন।
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=74557
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=54654
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=36736

আল্লাহ পাক মাতৃগর্ভে সন্তান থাকবার সময়ই ফেরেশতা পাঠিয়ে লিখে দেন, সন্তানটির রিজক, আমাল, আয়ু এবং দুর্ভাগ্য সম্পর্কে। যার আমলে ওই ফেরেশতা কাফের লিখে দেবেন, সে বড় হয়ে কাফেরই হবে। কোন মানুষের পক্ষে আল্লাহর লিখিত বিধান পরিবর্তন সম্ভব নয়।
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=32326
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=7689
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=27547
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=21649
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=54640

প্রতিটি মানুষ ঐ কাজই করবে যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং সেটি তার জন্য সহজ করা হয়েছে।
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=31360

শয়তান শুধুমাত্র তাদেরকেই গুমরাহ করতে পারে, যাদের জন্য আল্লাহ জাহান্নামকে ওয়াজিব করেছেন।
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=36645

আল্লাহ পাক যাকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেছেন, তাকে দিয়ে জান্নাতবাসীদের কাজ করিয়ে নেন, আর যাকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তাকে দিয়ে জাহান্নামীদের কাজ করিয়ে নেন।
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=62071

আল্লাহ জান্নাত ও তার অধিবাসীদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তা যখন তাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন, তখন তারা তাদের পিতাদের মেরুদন্ডে ছিলো। আবার তিনি জাহান্নাম ও তার জন্য একদল ভুক্তভোগী সৃষ্টি করেছেন এবং তা তাদের জন্য যখন তিনি সৃষ্টি করেছেন তখন তারা তাদের পিতাদের মেরুদন্ডে ছিলো।
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=62081

৪. নবী আদম মুসার উপর এই নাস্তিকীয় যুক্তি দিয়ে বিজয়ী হয়েছিল যে, যেহেতু তাকদীরে এসব আগে থেকেই লেখা আছে, সুতরাং আমার কোন দোষ নেই।

https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=18824
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=18825
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=18826

৫. আল্লাহ পাঁচটি বিষয়ে তাঁর সৃষ্টজীবের জন্য চূড়ান্তভাবে (তাক্বদীরে) লিখে দিয়ে নির্ধারিত করে রেখেছেনঃ (১) তার আয়ুষ্কাল (জীবনকাল), (২) তার ‘আমল (কর্ম), (৩) তার অবস্থান বা মৃত্যুস্থান, (৪) তার চলাফেরা (গতিবিধি) এবং (৫) এবং তার রিয্‌ক্ব (রিজিক/রিযিক) (জীবিকা)
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=54672

৬.কোন ব্যক্তিই তার আমলের বিনিময়ে জান্নাতে যাবে না, বরং জান্নাতে যাবে আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=19175
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=19176
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=19177

৭. মানুষের যিনা ব্যভিচার পূর্ব নির্ধারিত
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=18836
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=18835
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=53744
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=59520
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=54645

৮. মুমিনদের নাবালেক সন্তানরা জান্নাতী, কিন্তু মুশরিকদের নাবালেক সন্তানরা জাহান্নামী।
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=54670
জীবন্ত প্রথিত কন্যা শিশু ও মা উভয়ই জাহান্নামী।
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=36748