কুরআনের অপবিজ্ঞান ও মুসলিমদের মিথ্যাচার -১
মিথ্যা ছাড়া ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। যে জাতি যত চাপাবাজ এবং হুজুগে, তাদের দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা তত সহজ।
আপনি যখন বলেন আমি মডারেট ইসলাম মানি, কিন্তু কুরআনকে বিজ্ঞানময় প্রমাণ করতে গিয়ে ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন, তখন তাতে স্পষ্ট ভণ্ডামিই প্রকাশ পায় যা আপনি বুঝেও বুঝেন না। তার কারণ হতে পারে, আপনারা পিক & চুজ নামক লজিক্যাল ফ্যালাসি এবং ইতিহাস সম্পর্কে জানেন না। পিক & চুজ লজিক্যাল ফ্যালাসি হচ্ছে কোনকিছুর অনুবাদ করার সময় মনগড়া অর্থ নেয়া এবং এই ছলচাতুরী করে যে কোন গ্রন্থে থেকেই বিজ্ঞান বের করা সম্ভব। আর ইতিহাস সম্পর্কে না জানার কারণে তারা জানেই না যে তারা কুরআনের যেসব বাণীকে বৈজ্ঞানিক বলে দাবি হয় যে কুরআনই প্রথম বলেছে, সেগুলো মূলত কুরআনের বহু পূর্বেই অনেক বইয়ে উল্লেখ ছিলো এবং অনেক দার্শনিক বলে গেছেন।
যাই হোক, মুমিনেরর দাবী সুরা মুরসালাত আয়াত ২৫ নিয়ে যে, এই আয়াত থেকে নিউটন গ্রাভিটি আবিষ্কার করেছে।
আল্লাহ বলেন, “আমি কি পৃথিবীকে ধারণকারী রুপে সৃষ্টি করিনি?” এখানে মডারেট মুমিনেরা ধারণকারী বদলে আকর্ষণকারী বলছে। আর নিউটন নাকি এই আয়াত থেকেই গ্রাভিটি আবিষ্কার করেছে, হাস্যকর!
প্রথমত ধারণকারী আর আকর্ষণকারী এক নয়। গ্লাস পানি ধারণ করে তারমানে এই নয় যে গ্লাস পানি আকর্ষণ করে। বিপরীত পোলের চৌম্বক পরস্পরকে আকর্ষণ করে মানে এই নয় যে তারা পরষ্পরকে ধারণ করে। ভন্ডদের বলে রাখা ভালো যে খ্রিস্টপূর্ব বহু সাল আগেই মানুষ জানত যে পৃথিবী আমাদের সকল বস্তুকে ধারণ করে।
অতীতে যারা পৃথিবীর পুজা করত তারা পৃথিবীকে মায়ের সাথে তুলনা করত যেমন মা তাদের সন্তানদের ধারণ করে, আশ্রয় দেয়। এখন কি তারাও গ্রাভিটির আবিষ্কারক হয়ে যাবে (যেহুতু ধারণকারী আর আকর্ষণকারী এক)? তার উপরে বৈজ্ঞানিকভাবে Aristotle ২৪০০ বছর পূর্বে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন এইভাবে যে প্রত্যেক বস্তু একটি নির্দিষ্ট দিকে যায় তার আভ্যন্তরীণ ভারের কারণে। Vitruvius ২১০০ বছর পূর্বে বিষয়টি বলেন যে স্পেসিফিক গ্রাভিটির জন্য প্রত্যেক বস্তু নিচের দিকে পড়ে যায়।
৭০০ খ্রিস্টাব্দেও ব্রহ্মগুপ্ত গ্রাভিটিকে প্রথম আকর্ষণকারী ফোর্স বলেন। এ ধারণা মডিফাইড হয় ইবনে সিনা, গ্যালিলিও পরবর্তীতে নিউটন দ্বারা।
ধারণা কিংবা ভাবমূলক কথা এক বিষয় আর সূত্র প্রদান আলাদা বিষয়। বর্বর আরবেরা পরম বিজ্ঞানময় কুরান পড়ে বিজ্ঞানী তৈরি করতে পারল না। আর মডারেটরা আসছে ধান্ধাবাজি করতে। আর যেসব মুসলিম বিজ্ঞানী অতীতে পয়দা হয়েছে তাদের সবাই পূর্ববর্তী গ্রিক বিজ্ঞানীদের কাজ অনুসরণ করেছিলেন।
যেমন আব্বাসী খেলাফতের সময় মুসলিম বিজ্ঞানীদের এত উন্নতি সাধনের জন্য দায়ী ছিল যে তারা খ্রিস্টান ও অন্যান্য রাজ্যের বিজ্ঞানের কাজগুলোকে নিয়ে আরবি ভাষায় কনভার্ট করেছিলেন। গনিতে তারা গ্রিক,চাইনিজ,ইন্ডিয়ান, পারসিয়ানদের থেকে জ্ঞান নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। মেডিসিনে ইবনে সিনা গ্রিক বিজ্ঞানীদের কাজকে অনুসরণ করতেন।জাবির ইবনে হাইয়ান এর কাজগুলা গ্রিক ও মিশরীয় কাজের পরবর্তী রুপ।
তবে তার বহু কাজ বাইজেন্টাইন বিজ্ঞানীদের সাথে মিলে যেত সেসময় কারণ তারা একই সময়ের ছিলেন। আল কেমি আরবী শব্দটার অরিজিন গ্রিক khumeia থেকে। আল কেমি থেকে কখনো কেমিস্ট্রির নামকরণ হতনা যদি আলকেমির প্রমাণিত কোন গ্রিক অরিজিন না পাওয়া যেত।
আরবী কোন পরম শব্দ নয়, এটার ভেতরে বিদেশি অনেক শব্দ প্রবেশ করেছে।কোরানের এরাবিক মুলত খ্রিস্টাব্দ ৬০০-৮০০ সালের দিকে লেখা। তাই মডারেটরা শব্দ নিয়ে ভন্ডামি করার সুযোগ পায়। মূলত সেই ৭০০-১০০০ সালের যারা তাফসীর লেখক ছিলেন তাদের তাফসির পড়লেই বোঝা যায় কোরান গন্ডমুর্খদের কিতাব ছাড়া আর কিছুই নয়।
বর্তমানে মডারেটরা শব্দের ধোঁকাবাজি করে কোরানকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ করতে ব্যস্ত। নবির হাদীস তাফসির মডারেটরা না পড়লেও তারা মাদ্রাসায় এগুলা যারা পড়ে গন্ডমুর্খ হয় তাদের অর্থায়ন করে।