ইসলাম ও সহিংসতা :

 পৃথিবীতে এত এত ধর্ম থাকতে ইসলামের মাধ্যমে কেন সহিংসতা ছড়ানো হয় বা সহিংসতা ছড়ায়? ইসলাম ই কেন জঙ্গি ও মৌলবাদীদের আতুড়ঘর। এর পিছনে কাজ করে জিহাদ সম্পর্কে কিছু হাদিস ও আয়াত। যেগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুসলিমদের অনুপ্রেরণা যোগায় জিহাদ করতে। তাছাড়া ইসলামের আবির্ভাব ই হয়েছে যুদ্ধ বিগ্রহের মাধ্যম। 

ইসলাম শান্তির ধর্ম কিন্তু এই ধর্ম প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে এত এত যুদ্ধ কেন করতে হলো? পৃথিবীতে অন্য কোন ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এত যুদ্ধ করতে হয়নি। আসলে সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে হলে অনুসারীদের হিংস্র না বানালে অসুবিধা ই পড়তে হবে। আর সে দিক বিবেচনা যুদ্ধ উদ্ধুদ্ধ করতে জিহাদের বিকল্প ছিল না। শুধু রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে ইসলাম থেমে থাকে নি,পরবর্তীতে কেউ ইসলামের বিরুদ্ধে গেলে তাকে কতল করার বিধান ও রেখে গেছে। আজ থেকে লাখ লাখ বছর আগে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা যেমন গোত্রের নিয়ম না মানলে হত্যা করত, অমান্যকারীকে তেমন। 

মুসলিম ও নাৎসীদের মধ্যে তেমন কোন মৌলিক পার্থক্য নেই। ইসলামে মুসলিমরা মনে করে তারাই শুধু আল্লাহর মনোনীত, আর বাকিরা সবাই কাফের। আর নাৎসীরা মনে করে আর্যরা ই শ্রেষ্ট। দুটো ই মানবতার জন্য মারাত্মক। 

বর্বরতা আমাদের পূর্ব পুরুষের ডিএনএ থেকে ই আমরা পেয়েছি। আমরা সভ্য হওয়ার সাথে সাথে এই বর্বরতা কমানোর কথা ছিল। বাকি বড় ধর্ম গুলো বর্বরতা কমালে ও হিন্দু ও মুসলিমরা যেন এর বিপরীত। 

ইসলামে প্রায় লোভ দেখানো হয়। আবার তারা ই বলে লোভ করা যাবে না,লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। তারপর তারাই আবার জান্নাতের লোভ, হুরপরীর লোভ, জিহাদ করলে দশটি মর্যাদার লোভ। ধর্মটায় কেমন জানি বাকি লেনদেন বেশি চলে। আর আমরা জানি বাকির নাম ফাকি। 

একটা সময় ইউরোপে হত্যার বদলে হত্যা আইন ছিল কিন্তু কালের পরিক্রমায় তারা তাদের এই আইন শিথিল করেছে। এখন হত্যাকারীকে হত্যার বদলে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা হয়। আর ইসলামে এর বিপরীত। ইসলামে মানুষ হত্যা করতে হয় না, তাদের কাল্পনিক সত্তা কে আপনি সমালোচনা করুন তবে ই হলো জিহাদের নামে বেহেশতের লোভে আপনার কল্লা নাই। এই লোভ বড় ভয়ংকর। এই মানবতার চরম অবমাননা। 

নিচে জিহাদ সম্পর্কিত হাদিস ও কোরআনের আয়াত দেওয়া হলো 

১. আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “কেয়ামতের দিন শহীদের রক্তের প্রথম ফোঁটা পতিত হওয়ার সাথে সাথে তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।” (সহীহ বুখারি: ২৮০৩)

2. আবু মূসা আল-আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করে, সে যেন একমাস রোজা রাখে এবং এক রাত ইবাদত করে।” (সহীহ বুখারি: ২৬৩০)

3. ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “আল্লাহর পথে একদিন ও একরাত প্রহরারত থাকা এক মাসের রোজা ও এক মাসের রাত্রির ইবাদতের চেয়ে উত্তম।” (তিরমিযি: ১৬৬৭)

4. আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে নিহত হয়, তার জন্য জান্নাতে দশটি মর্যাদা রয়েছে।” (তিরমিযি: ১৬৪৪)

১. **সূরা আল-বাকারা (২:১৯০-১৯৩)**:

   – “আর তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর তাদের সাথে, যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে। কিন্তু সীমালঙ্ঘন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।” (২:১৯০)

   – “আর তাদেরকে হত্যা করো, যেখানেই তোমরা তাদের পাও, এবং তাদেরকে বহিষ্কার কর সেখান থেকে, যেখান থেকে তারা তোমাদেরকে বহিষ্কার করেছে। এবং ফিতনা হত্যা অপেক্ষা কঠিন।” (২:১৯১)

২. **সূরা আত-তওবা (৯:৪১)**:

   – “তোমরা হালকা-ভারী (যেভাবেই থাকো না কেন) যুদ্ধের জন্য বের হও এবং নিজেদের ধনসম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।” (৯:৪১)

৩. **সূরা মুহাম্মাদ (৪৭:৪)**:

   – “অতএব, যখন কাফিরদের সাথে তোমাদের মুখোমুখি যুদ্ধ হয়, তখন তাদের গর্দান মারো, অবশেষে যখন তাদের শক্তি সম্পূর্ণভাবে পরাভূত করো, তখন বন্ধন শক্ত করো।” (৪৭:৪)

৪. **সূরা আন-নিসা (৪:৭৪)**:

   – “অতএব, যারা পার্থিব জীবনকে পরকালের বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়, তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করুক। আর যে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, অতঃপর নিহত হয় অথবা বিজয় লাভ করে, আমি তাকে মহাপুরস্কার প্রদান করবো।” (৪:৭৪)

যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ শান্তির ধর্মের শুধু যুদ্ধ। এই যুদ্ধের দরকার সম্রাজ্য ঠিকিয়ে রাখতে, মানুষের কল্যাণে না। সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই জিহাদ সম্পর্কিত আয়াত হাদিসগুলো ই যথেষ্ট, যেগুলো পরবর্তীতে ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠী তৈরীতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করে। আপনি নিজেই নিরপেক্ষ দৃষ্টি দিয়ে বিচার করুন।

  • Alamin Mia

    Related Posts

    রুমডেট পর্ব -১

    প্রেম হওয়ার ৬ মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো রুমডেটিংয়ে এসে আরিফ এবং ফারহানা পরস্পরকে খুব নিবিড়বন্ধনে জড়িয়ে শুয়ে আছে। বাইরে বৃষ্টি। মাঝেমধ্যে বজ্রপাতের শিহরণ। আরিফ তার খোলা বুক দিয়ে অনুভব করছে ফারহানার হৃদয়কম্পন। এমন সময় আরিফ ফারহানাকে জিজ্ঞেস করে : জান, তুমি কী দেখে আমাকে এত ভালোবাসলে? আমার মধ্যে কীএমন পেয়েছ? ফারহানা ফিসফিস করে উত্তর দেয় : ‘সোনাপাখী তোমার মধ্যে আমি যা পেয়েছি তা হলো—উত্তম চরিত্র। তুমি পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ো।…

    Read more

    হজ্জ ও বিবিধ প্রসঙ্গ

    “মক্কা গিয়ে হজ্জ করিয়ে খরচ করলি যে টাকা সে টাকা গরীবকে দিলে গরীব আর থাকে কেডা,তর ঘরের ধন খা পরে পরে দেশের লোক না খাইয়া মরে সত্যি কথা কথা বললে পরে দেশে থাকতে দিবি না।”  মাতাল রাজ্জাক! প্রত্যেক ধনবান নারী পুরুষের জন্য একবার হজ্জে যাওয়া ফরজ। এখানে ধনবান শব্দটা দিয়ে এটাই নির্দেশ করে যে কিছু মানুষের সামর্থ্য থাকবে না, অর্থাৎ, দুনিয়া নামক পরীক্ষার হলে তিনিই বৈষম্যটা শুরু করেছেন। হজ্জ…

    Read more

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Latest

    আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কি হিন্দু শাক্তদেবী মা-কালীকে উদ্দেশ্য করে লেখা?

    আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কি হিন্দু শাক্তদেবী মা-কালীকে উদ্দেশ্য করে লেখা?

    একেই কি বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?

    একেই কি বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?

    কর্ণচিকিৎসা

    কর্ণচিকিৎসা

    তাকদীর বিষয়ক রেফারেন্স

    তাকদীর বিষয়ক রেফারেন্স
    কুদরত

    পরকাল নিয়ে মুমিনদের বহুল জিজ্ঞেসিত প্রশ্নের জবাব

    পরকাল নিয়ে মুমিনদের বহুল জিজ্ঞেসিত প্রশ্নের জবাব