কুরআন ততটুকুই বলতে পারে যতটুকু সেকালের মানুষেরা জানতো। সেকালের কোন মানুষ জানতো না বা জানা সম্ভব ছিলো না এমন কিছু কুরআন বলতে পারেনি।
[ আমরা সাধারণ মুসলিমরা হয়তো জানি না, তার মানে কিন্তু এই নয় যে আর কেউ জানতো না। আপনি বলতে পারেন ১৪০০ বছর পূর্বে ভ্রূণতত্ত্ব সম্পর্কে কে জানতো? হ্যাঁ, জানতো। আজ থেকে প্রায় ২৫০০ বছর পূর্বে ভ্রূণতত্ত্ব সম্পর্কে সর্বপ্রথম উল্লেখযোগ্য ধারণা দেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক হিপোক্রেটিস। কুরআনে যে ভ্রূণতত্ত্ব আছে (যদিও সেটাতেও ভুল রয়েছে), সেটা হলো নবী মোহাম্মদেরও বহু পূর্বে জন্ম নেয়া গ্রিক চিকিৎসক গেইলেন এর ভ্রূণতত্ত্বের হুবহু কপি।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Embryology ]
আপনি এমনই কুরআনের আরো কিছু গল্প বা উক্তি দেখাতে পারেন যে এসব কে জানতো, উত্তর হলো জানতো। কুরআন বর্ণিত সমুদ্রে একটি পানি অপরটির সাথে যে মিশে না, এটাও মানুষ জানতো। কারণ, কুরআন নাজিল হওয়ার বহু পূর্বেই মানুষ সমুদ্র ভ্রমণ করতো। এই দৃশ্য শুধু সমুদ্র নয়, আমাদের পদ্মা নদী এমনকি ভারতের উত্তরাখন্দ প্রদেশের একটি প্রাচীন খালেও দেখা যায়৷ সাধারণ মানুষ ভাবতো একটি পানি হয়তো অন্যটির সাথে মিশে না, কুরআনেও ঠিক তাই বলা আছে৷ অথচ আমরা এখন বিজ্ঞানের কল্যাণে জানতে পেরেছি যে একটি পানি অন্যটির সাথে মিশে, আপাতদৃষ্টিতে যদিও আমাদের কাছে ভিন্নটি মনে হয়।
https://www.adn.com/science/article/mythbusting-place-where-two-oceans-meet-gulf-alaska/2013/02/05
কুরআনে উটের কথা ১৯ বার থাকলেও ডাইনোসর নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণীর কথা একবারও নেই। কেন আল্লাহ কুরআনে বলতে পারলো না যে অমুক জায়গায় ডাইনোসর নামক বিশাল প্রাণীর ফসিল আছে? কুরআন বিভিন্ন মানুষের সম্প্রদায়ের বিলুপ্তির কথা আছে কিন্তু কোন প্রাণীর বিলুপ্তির কথা নেই। গোঁজামিল দেয়ার চেষ্টা করবেন না। বললাম না? সেই সময়ের মানুষ যা জানতো না কুরআনও তা জানতো না।
এবার আসি ফেরাউনকে সম্পর্কে কুরআনের অজ্ঞতা নিয়ে :
ফেরাউনের নাম সেকালের ( মোহাম্মদের সময়ের ) মানুষ জানতো না। যদিও একজন অত্যাচারী ফেরাউনের গল্প সেকালের অধিকাংশ মানুষই জানতো। সেটা লোকগাথা হিসেবে এবং তাওরাহ বা বাইবেলে বর্ণিত ছিলো। কুরআনে একই কাহিনী একটু বিকৃত করে তুলে ধরা হয়েছে, নয়তো মানুষ বলবে হুবহু কপি। যদিও এর পূর্বে তাওরাহ থেকে হুবহু কপি করার কারণে সমস্যায় পড়েছিলেন। তাওরাহ লিখার সময় ফেরাউনকে অত্যাচারী হিসেবে তুলে ধরেছিলো মূলত ইহুদিরা, যাতে তারা নিজ নবী মুসাকে হিরো বানাতে পারে। মুসার যদিও ঐতিহাসিক কোন প্রমাণ নেই, যতটুকু আছে সেটা হলো তাওরাহ বা বাইবেল কেন্দ্রিক। কিন্তু প্রতিটি ফেরাউনের মমি, চিত্রকর্ম, হায়ারোগ্লিফিক ভাষায় লিখা তাদের ইতিহাস ইত্যাদি পাথরে লিপিবদ্ধ আছে। আল্লাহ তার নবী এবং কিতাবগুলোর ঐতিহাসিক কোন প্রমাণ রাখতে পারেনি, অথচ মানুষ পেরেছিলো। আর ঐতিহাসিক প্রমাণ রাখতে পারলে তার কোন কিতাবই বিকৃত হতো না এবং বিকৃতির দোহাই দিয়ে বারবার কিতাবও পাঠাতে হতো না।
আল্লাহ এত জ্ঞানী হয়েও এবং কুরআনের ২৭ টি সুরায় ৭৪ বার ফেরাউনের নামটা উল্লেখ্য করলেও কোন ফেরাউন বা তার নামটি উল্লেখ করতে পারেনি। ( কারণ মোহাম্মদ কারো কাছ থেকে বা কোনভাবে তা জানতে পারেনি। তাছাড়া, তাওরাত এবং বাইবেলেও কোন ফেরাউন তা উল্লেখ নেই। কেননা, ওসব কিতাব তো মুসার মৃত্যুর বহু পরে রচিত হয়েছে। তাই, মুসার সাথে কোন ফেরাউনের দ্বন্দ্ব ছিলো তা লেখকরা জানতো না৷
এখন আমরা সবাই জানি, ইতিহাসবিদ এবং ইসলামিক স্কলাররাও জানে যে ফেরাউন কোন ব্যক্তির নাম নয় এটি ছিলো তৎকালীন মিশরীয় শাসকদের উপাধি। যেমন: আমাদের দেশের শাসকদের উপাধি হলো প্রধানমন্ত্রী, কোরিয়ার শাসকদের উপাধি হলো রাষ্ট্রপতি, রাজতান্ত্রিক দেশের শাসকের উপাধি হলো রাজা, প্রিন্স বা বাদশাহ। এখন প্রধানমন্ত্রী বা বাদশাহ কিন্তু কোন ব্যক্তির নাম নয় বরং উপাধি। এখন আমি যদি ২/৩ হাজার বছর পর যদি বলি প্রধানমন্ত্রী অমুক কাজ করেছে তাহলে কি হবে? নাকি কোন প্রধানমন্ত্রী বা কোন বাদশাহ তার নামও উল্লেখ করতে হবে? অবশ্যই নামসহ উল্লেখ্য করতে হবে। কিন্তু কুরআন তা না করে ফেরাউনকে ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরে স্পষ্ট অজ্ঞতার পরিচয় দিলো।
[ কুরআন যে কোন সৃষ্টিকর্তা রচিত গ্রন্থ নয় বরং মোহাম্মদ ও তার সাহাবাকতৃক রচিত গ্রন্থ তা বুঝতে এতটুকুই যথেষ্ট। ]
ফেরাউনের উচ্চতা নিয়ে মুসলিমদের মিথ্যা বিশ্বাস :
প্রায় সব মুসলিমদের মধ্যে এই মিথ প্রচলিত ছিলো যে ফেরাউনের উচ্চতা ৬০ হাত ছিলো, কিন্তু ফারাওদের মমি আবিষ্কারের পর কিছু মুসলিমদের ভুল বিশ্বাস ভাঙলেও এখনও অধিকাংশ মুসলিম বিশ্বাস করে ফেরাউন বুঝি ৬০ হাত লম্বা। এছাড়াও মুসলিমদের মধ্যে এবং পৌরাণিক গল্পে আরেকটি মিথ প্রচলিত আছে যে আগের মানুষ বর্তমান মানুষের তুলনায় বেশি লম্বা ছিলো এবং বেশি বাঁচতো, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা ইন্টারনেটে কিছু এডিট করা ছবি এবং সিনেমার ভিডিও থেকে ছড়ানো গুজব দেখে নিজেদের ভুল বিশ্বাসকে আরো শক্ত করে।
মানুষের উচ্চতা এবং হায়াত পূর্বের চেয়ে বর্তমানে বেশি: https://www.sciencedaily.com/releases/2017/11/171108092241.htm
জায়ন্ট কঙ্কালগুলোর গুজব :
https://www.nationalgeographic.com/history/article/skeleton-giant-photo-hoax
অথচ ফেরাউনদের মধ্যে সবচেয়ে লম্বা ছিলেন রামেসিস ২ যার উচ্চতা ছিলো মাত্র ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি এবং তারপর ছিলেন তার পুত্র মার্নেপতা যার উচ্চতা হলো ৫ ফুট ৬।
রামেসিস ২ এর উচ্চতা :
মার্নেপতার উচ্চতা :
ফেরাউনদের উচ্চতা:
https://www.google.com/amp/s/www.seeker.com/amphtml/mummies-height-reveals-incest-1769829336.html
ফেরাউনের মৃত্যু নিয়ে কুরআনের অজ্ঞতা :
প্রাচীন মিথ বা গুজব অনুযায়ী কুরআনেও ফেরাউনের মৃত্যু নিয়ে মিথ্যাচার বা গুজব ছড়ানো হয়েছে।
রামেসিস ২য় এবং মার্নেপতা উভয়ই আর্থ্রাইটিসে ভুগে বৃদ্ধ বয়সে মারা যান। তাদের কারো লাশই সমুদ্র থেকে তোলা হয় নি। এমনকি কোন ফেরাউনের লাশই সাগর বা নদী থেকে তোলা হয় নি। অনেকেই লবণ দেখে বা লবণ পাওয়ার কারণে সাগর থেকে তোলা হয়েছে বলে ধারণা করেন যা অযৌক্তিক এবং খুবই হাস্যকর। কেননা, লবণ একটি প্রিজারভেটিভ এবং কমবেশি সবগুলো মমিতেই লবণ ব্যবহার করা হতো। লবণ মানেই যদি সমুদ্র থেকে তোলা হয় তাহলে তো সবগুলো মমিকেই সাগর থেকে তোলা হয়েছিলো। সুতরাং সমুদ্র থেকে তোলা হয়েছিলো এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এই দাবির পক্ষে বৈজ্ঞানিক কোন প্রমাণ নেই, উল্টো বাস্তবতা এর বিপক্ষে।
তাদের সমাধির আশেপাশে এতো চিত্রকর্ম, এতো লিখা, কোথায় এমন কোন ইঙ্গিত পর্যন্ত নেই যে তার বা কোন ফেরাউনের লাশ সমুদ্র থেকে তোলা হয়েছিলো। যে ব্যাক্তি ফেরাউনের নামটি পর্যন্ত জানতো না তার দাবি ভুল হবে এটাই স্বাভাবিক।
মমিতে লবণের ব্যবহার : https://en.m.wikipedia.org/wiki/Natron#:~:text=Historical%20natron%20was%20harvested%20directly,both%20the%20home%20and%20body.&text=The%20mineral%20was%20used%20during,behaves%20as%20a%20drying%20agent
লাশ সংরক্ষণ নিয়ে কুরআনের অজ্ঞতা :
আল্লাহ শুধুমাত্র একজন ফেরাউনের লাশ সংরক্ষণ করার কথা বলেছেন ভবিষ্যৎ নিদর্শন/মোজেজা হিসেবে। অথচ আমরা দেখি যে, মিশরেই অনেক অনেক মমি অক্ষত অবস্থায় আবিষ্কৃত হয়েছে। মিশর ছাড়াও আফ্রিকা, ইউরোপ,আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, চায়নাসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও আরও অক্ষত মমি আবিষ্কৃত হয়েছে। তো ঐ মমিগুলো কার মোজেজা? ঐ মমিগুলোকে সংরক্ষণ করেছে ভবিষ্যৎ নিদর্শন হিসেবে? আল্লাহর দেখানো মোজেজা অনুযায়ী শুধুমাত্র একটি মমি পাওয়ার কথা ছিল, তাই নয় কি?? যে কাজ মানুষ করতে পারে সে কাজ যদি আল্লাহও করতে পারে বা করে থাকে তবে সেটা কিভাবে মোজেজা হয়?
এবার আসি, কুরআন বর্ণিত সেই মমি আসলেই কি অক্ষত? ওই মমিটা দেখে কি ওটাকে আসলেই অক্ষত মনে হয়? অথচ মানুষেরই বানানো অন্যান্য মমিগুলো এমনকি আরো পুরোনো মমিগুলোও অনেক বেশি অক্ষত। বাকিটা নিজেই বুঝে নিন।
ফেরাউনের মমি বর্তমানে যতটুকু অক্ষত দেখছেন ততটুকু অক্ষত থাকতো না যদি এটার পেছনে বিশেষ ট্রিটমেন্ট দেয়া না তো। প্রশ্ন জাগে না যে যেই লাশটা আল্লাহ নিজে সংরক্ষণ করার কথা বলেছে সেই মমিকে সংরক্ষণ করার জন্য কেন এতো টাকা খরচ করে মানুষের সাহায্য নেয়া হচ্ছে? সেটাতে তো কোন প্রিজারভেটিভ দেয়ার প্রয়োজনই ছিলো না৷ আল্লাহ অলৌকিকভাবেই সংরক্ষণ করতো, তাই না? মনে প্রশ্ন জাগে না?
রামেসিস ২ এর মমির ট্রিটমেন্টের জন্য এটাকে ফ্রান্সে পাঠানো হয় : https://www.ancient-origins.net/history-famous-people/mummy-passport-0010944
সৌদির ভাড়াটিয়া চিকিৎসক মরিস বুকাইকে দিয়ে অপপ্রচার এবং বৈজ্ঞানিক সত্যতা সম্পর্কে মুসলিমদের অজ্ঞতা :
প্রথমত মরিস বুকাই মূলত কোন বিজ্ঞানী বা ফরেনসিক এক্সপার্ট নয়, সে একজন চিকিৎসক। একজন বিজ্ঞানীও যদি প্রমাণহীন কোন দাবী করে শত শত বই বা আর্টিকেল লিখে ফেলে তবে সেটাকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ বলা হয় না। ইন্ডিয়ায় বহু ভালো মানের চিকিৎসকও গোমূত্রের পক্ষে বই লেখে এবং জনপ্রিয় হয় , তাই বলে তো সেই বই বৈজ্ঞানিক সোর্স হয় না। ইন্ডিয়াতে অনেক মুসলিম বুদ্ধিজীবীও টাকার জন্য হিন্দুধর্মের পক্ষে কথা বলে, মনগড়া যুক্তিও দেখায়। তাই বলে তো সেটা বৈজ্ঞানিক প্রমাণ হয় না।
হ্যাঁ, কারো লিখা বা বইয়ে যদি পিয়ার রিভিউ জার্নাল বা সাইন্স জার্নাল থেকে রেফারেন্স দেয়া থাকে তবে সেটাকে বৈজ্ঞানিক সত্য বলা যাবে,তেমনি বিজ্ঞান বিষয়ে উইকিপিডিয়ার কোন আর্টিকেল মানেই বৈজ্ঞানিক সত্য নয়। তবে উইকিপিডিয়ার ওই আর্টিকেলের রেফারেন্সে যদি বৈজ্ঞানিক বা পিয়ার রিভিউ জার্নাল উল্লেখ থাকে তবে সেটা বৈজ্ঞানিক সত্য বা প্রমাণিত।
এবার আসুন আমরা দেখি মরিস বুকাই তার বইতে কি বলেছে। সে কি আদৌ কুরআনের ফারাও এর লাশ পানিতে ডুবে মরা নিয়ে কোন প্রমাণ দিয়েছে? উত্তর হলো: না। “Mummies of Pharaohs : Modern Medical investigation” বইয়ের Part VI – The Pharaoh and Moses, Lesson 15 তে মরিস বুকাই নিজেই বলেছেন যে এটা একটা অনুমান। লাশটি মৃত্যুর পূর্বে বা পরে পানিতে ডুবতে পারে। তবে পানিতে ডুবলেও, বেশিক্ষণ পানিতে ছিলো না। বেশিক্ষণ থাকলে এটাকে মমি করা সম্ভব হতো না। ( এর পূর্বে প্রকাশিত Quran Bible & Science বইয়েও তিনি একই কথা বলেন।)
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো, মুসলিমরা যে বুকাই নামে ( নামটার সঠিক উচ্চারণ জানে না তাই বুকাইলি বলে ) মুখে ফেনা তুলেন এবং অজ্ঞতাবশত তাকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মনে করেন, তারা হয়তো এটা জানে না যে তিনি একই বইয়ে, একই অধ্যায়ে বিভিন্নভাবে যুক্তি ও রেফারেন্স দিয়ে একাধিকবার দাবি করেছেন যে মুসার সময় ২জন ফরাও ছিলো এবং Pharaoh of Exodus ছিলো মার্নেপতা, রামেসিস ২য় নয়, যা বাইবেল সমর্থিত কিন্তু কুরআনের বিপক্ষে। অর্থাৎ তার এই দাবি অনুযায়ী কুরআন ভুয়া যেহেতু কুরআন অনুযায়ী মুসার সময়কালীন ফারাও ছিলো একজন এবং Pharaoh Of Exodus ছিলো রামেসিস ২য়।
( মুসলিমদের সবচেয়ে সমস্যা হলো ইসলামের পক্ষে কেউ কোন কথা বললেই কোনধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই সেটাকে ভাইরাল করে এবং ব্যক্তিকে হিরো বানিয়ে দেয়। এজন্য ভন্ড প্রকৃতির লোকরাও তাদের এই দূর্বলতাকে ব্যবহার করে। পরে আমরা ধরিয়ে দেয়ার পর পস্তায়৷ এর পূর্বে রাশাদ খলিফা নামক এক জেনারেল শিক্ষিত ভন্ড লোক কুরআনে ১৯ সংখ্যার ভুয়া মিরাকল বের করে মুসলিমদের বিভ্রান্ত করেছিলো। পরে দেখা গেলো সে বিভিন্ন সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচার করেছিলো এবং সংখ্যার সাথে মিলানোর জন্য কুরআনের আয়াত – সূরা বাদ দিয়ে দিয়েছিলো এবং কুরআনকে বিকৃত করেছিলো। অথচ প্রথমে ইসলামিক স্কলাররাও সেটা বুঝতে পারেনি। ধর্মীয় আবেগ উন্মাদনায় থাকলে বুঝবে কিভাবে? যারা তাকে প্রমোট করেছিলো, সত্য জানার ওপর তারাই তাকে কাফের ফতোয়া দিয়েছিলো কুরআন বিকৃতির কারণে। )
বৈজ্ঞানিক সত্যতা যাচাইয়ের একাডেমিক প্রসেস আছে। পিয়ার রিভিউ জার্নাল আছে। একজন বিজ্ঞানী তার দাবি, প্রমাণ এবং গবেষণা পিয়ার রিভিউ জার্নালে জমা দিবে। তারপর সেখানে বাকি বিজ্ঞানীরা সেটা যাচাই বাছাই করে সঠিক হলে তা বৈজ্ঞানিক পিয়ার রিভিউ জার্নালে প্রকাশ করে এবং এসব জার্নালই বৈজ্ঞানিক সত্যতার জন্য অথেনটিক সোর্স। কিন্তু পিয়ার রিভিউ জার্নালেই নয়, এমনকি সাইন্স জার্নালেও এমন আজগুবি তথ্য নেই যা মুসলিমরা মরিস বুকাই এর বই থেকে দাবি করে। খোদ তার বইয়েও নেই।
মূলত মরিস বুকাই যখন কায়রো জাদুঘরে গিয়ে দেখে তথাকথিত অলৌকিকভাবে রক্ষিত রামেসিস ২ এর মমির খুবই খারাপ অবস্থা, তখনই সে এটাকে ট্রিটমেন্টের পরামর্শ দেয় এবং উন্নতমানের ট্রিটমেন্টের ফ্রান্সই সুবিধাজনক ছিলো। কিন্তু সাধারণ মানুষ যদি এটা জানতে পারে তবে তো বিশ্বাস দূর্বল হয়ে যাবে, আর বিশ্বাস দূর্বল হলে কায়রো মিউজিয়ামের ইনকামও কমে যাবে। তাই হয়তো মানুষের দৃষ্টি ভিন্নদিকে সরানোর উদ্দেশ্যেই এই অপপ্রচার চালানো হয়।
মরিস বুকাই এর নামের সঠিক উচ্চারণ না জানা লোকেরাই মরিস বুকাই এর বই না পড়েই শুনা কথায় সেটা নিয়ে লাফালাফি করে এবং ধর্ম বিশ্বাস দ্বারা বায়াসড হয়ে একটি সাধারণ অনুমানকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মনে করে বৈজ্ঞানিক সত্যতা সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতাই প্রকাশ করে।
যেমন: কোন ব্যক্তি যদি খাটি স্বর্ণ না চিনে বা কোথায় স্বর্ণ পরীক্ষা করাতে হয় তা না জানে, তবে নকল সোনাকেই খাটি সোনা বলে চালিয়ে দিয়ে তাকে খুশি করানো যায়, আর এটা যদি তার ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে মিলে তবে তো কথাই নেই।
– Forhad H Fahad
23.03.2019