ধরুন, একজন আধুনিক সভ্য মানুষ হিসেবে আপনার কাছে অবশ্যই যুদ্ধবন্দী নারীকে গনিমতের মাল হিসেবে বিছানায় নেয়া খুবই নিন্দনীয় কাজ বলে গণ্য হবে। কিন্তু এই কাজটি আপনার নবীজী নিজ জীবনে কয়েকবারই করেছেন, এবং অন্যদেরও করতে বলেছেন। বা ধরুন আপনি এমন কারও সাথে আপনার বোন বা কন্যাকে বিয়ে দেবেন না, যার ইতিমধ্যে তিনজন স্ত্রী আছে। আপনার বিবেক, বুদ্ধি, আধুনিক মূল্যবোধ, আধুনিক ধ্যান ধারণা আপনাকে সেইসব মধ্যযুগীয় কাজ করতে বাধা দেবে। যদিও আপনি ভাবেন, নৈতিকতার একমাত্র মানদণ্ড আপনার ধর্মটিই, তারপরেও আপনি আপনার বিবেক বুদ্ধি খাঁঁটিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আপনি যখন বিবেক বুদ্ধি ব্যবহার করছেনই, তখন আপনার জন্য আসলে ধর্মের নৈতিকতার শিক্ষা অগুরুত্বপুর্ণ।
ধর্ম বলছে, শিশু বিবাহ সুন্নত, বহুবিবাহ সুন্নত, কাফের কতল সুন্নত, জিহাদ করা সুন্নত, গনিমতের মাল বা দাসী ভোগ সুন্নত। আপনি বিবেক ব্যবহার করে সেগুলো করেন না। তাহলে অন্যান্য ক্ষেত্রেও এই বিবেকটুকু ব্যবহার করতে দোষ কোথায়?
নৈতিকতা শিক্ষার জন্য ধর্মের প্রয়োজন নেই। ধর্ম আমাদের যেই নৈতিকতার শিক্ষা দেয়, তা আধুনিক নৈতিকতার মাপকাঠিতে পুরোমাত্রায় নোংরামী এবং অমানবিক। ধর্ম আমাদের শেখায় গনিমতের মাল হিসেবে নারীকে ভোগ করা যাবে, নারীকে শষ্যক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে, বিধর্মীরা সব নরকে অনন্তকাল পুড়বে শুধুমাত্র একটি বিশেষ ঈশ্বরে অবিশ্বাসের জন্য। ধর্ম আরো শেখায় ভাল কাজ করলে স্বর্গে অসংখ্য বেশ্যা এবং মদ পাওয়া যাবে, খারাপ কাজ করলে নরকে অনন্তকাল মারপিট হবে। এইসব নৈতিকতা নয়, বেশ্যার লোভে যেই নৈতিকতার উৎপত্তি হয় তা আদৌ নৈতিকতাই নয়, বরঞ্চ এগুলো ঘৃণা সৃষ্টিকারী-বিধর্মী বা নারীর প্রতি। অপরদিকে মানুষের ভেতরেই প্রথিত থাকে কল্যানবোধ, মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা, যা ধর্ম-জাতীয়তাবাদ-লিঙ্গের বড়াই ইত্যাদির কারণে চাপা পরে যেতে থাকে। নাস্তিক্যবাদ মানুষের ঐ মৌলিক মানবিক বোধের বিকাশের কথা বলে, মানুষের ভেতরের নৈতিকতার কথা বলে, বিবেকের কথা বলে। যা কোন লোভ বা ভয়ের কারণে ভাল কাজ করবে না বা খারাপ থেকে বিরত থাকবে না।
– আসিফ মহিউদ্দিন