শিশুবিবাহ, বহুবিবাহ ও নবী মোহাম্মদের হিপোক্রেসি

বিবি খাদিজাকে যখন নবী মুহাম্মদ বিয়ে করে তখন খাদিজার বয়স ছিল ৪০ বছর এবং মুহাম্মদের বয়স ২৫ বছর। এখন কথা হলো কিছু দিন আগে বাংলাদেশে এক ছাত্র তার ম্যাডামকে বিয়ে করে। এটা নিয়ে আমাদের সমাজ এই পরিমাণ ট্রল করে যে ঐ ম্যাডামকে আত্মহত্যা করতে হয়। এখন আপনারা বলেন। যারা ট্রল করছে তারা আদৌ কি মুহাম্মদ অনুসারী নয়?

আপনার একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখবেন খাদিজার জীবদ্দশায় মুহাম্মদ কোন বিবাহ করে নি। যেই খাদিজা মারা গেল, তার একমাসের মাথায় ৯ বছরের আয়েশাকে বিয়ে করেছে। ৯ বছরের একটা বাচ্চাকে বিয়ে করে যেন সভ্যতার আলো জ্বেলেছন মোহাম্মদ, পৌত্তলিক অনেক ক্ষতিকর প্রথা ধ্বংস করেছেন! উনি না মহামানব, তাহলে কেউ এমন ক্ষতিকর কাজ করলে উনি কেন করবেন? ওনার মতো মহাজ্ঞানীর এতো এইটুকু বুঝা উচিৎ ছিলো যে শিশুবিবাহ কি পরিমাণ ক্ষতিকর, তার উপর তো একটা বুড়োর সাথে, ভাবা যায়? আরো ভয়ংকর অমানবিক বিষয় হলো নবীর মৃত্যুর সময় আয়েশা মাত্র যৌবনে পা রাখেন এবং নবীর স্ত্রী হওয়ার কারণে তার জন্য আজীবন বিয়ে নিষিদ্ধ ছিলো।

আচ্ছা, মুহাম্মদ কি আয়েশাকে অন্যভাবে ট্রিট করতে পারতেন না? কন্যা হিসেবে তাকে পালতে পারতেন না? আয়েশা তো নবীর মেয়ে ফাতেমার চেয়েও ছোট। নিজের মেয়েকে কিন্তু নবী মোহাম্মদ অল্প বয়সে বুড়োর কাছে বিয়ে দেননি, বরং ফাতিমাকে ১৫ বছর বয়সে ২১ বছর বয়সী আলীর সাথে বিয়ে দেন। অন্যদিকে, নবী মোহাম্মদ ৬ বছর বয়সী আয়েশাকে বিয়ে এবং ৯ বছর বয়সে সহবাস করেন। আবু বক্কর কি আয়েশাকে কাল্পনিক বেহেশতের জন্য নাকি পরবর্তীতে খলিফা হওয়ার জন্য বলি দিলো, সেটাও প্রশ্ন।

খাদিজা গত হওয়ার পর মুহাম্মদ বহুবিবাহ করেছে। তার একইসাথে ১১জন স্ত্রী এবং ২জন দাসী ছিলো, তবে সারাজীবনে অনেক বিয়ে করেছেন এবং অনেক দাসীর সাথে সহবত করেছেন। এই বহুবিবাহকে জাস্টিফাই করার জন্য মুমিনরা অনেক গোঁজামিল দিয়ে থাকেন, কিন্তু একটিও ধোপে টেকে না। যে আল্লাহ এতো ক্ষমতার মালিক, তার ধর্ম প্রচার প্রতিষ্ঠার জন্য কেন একটা শিশুকে বিয়ে করতে হবে এবং বহুবিবাহের মতো অসভ্য এবং অসম প্রথাকে জাস্টিফাই এবং প্র্যাকটিস করতে হলো? নিজেকে প্অরশ্সন করুন? অসম বলছি কারণ পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি, অর্থাৎ নারীর সংখ্যা কিছুটা কম, এমনকি কুরআনেও বলা আছে যে নারী-পুরুষকে জোড়ায় সৃষ্টি করা হয়েছে। তাহলে কি আল্লাহ নারী-পুরুষের সংখ্যার অনুপাত জানতেন না?

তবে নবী মোহাম্মদ নিজে বহুবিবাহ করলেও নিজ কন্যার জামাতা আলীকে যতদিন ফাতেমা বেঁচেছিলো ততদিন কিন্তু একাধিক বিয়ে করতে দেন নি। যদিও ফাতিমার মৃত্যুর পর আলীও ধুমায়ে বিয়ে করেছেন।

মেরাজ এবং বোরাক ফ্যান্টাসি কাহিনীতে ভরপুর ইসলাম। মেরাজে গেলো তাও আবার চাচতো বোন, পরনারী উম্মে হানির ঘর থেকে এবং ওই রাতে উম্মে হানীর ঘরে তার স্বামীও ছিলো না। আচ্ছা রাতের বেলা চাচতো বোনের ঘরে কি করে? যেই আল্লাহ বোরাকে করে পলকের মধ্যে এতো আলোকবর্ষ দূরে নিয়ে যেতে পারে, সে নবী মোহাম্মদকে নিজের ঘর থেকে যেতে পারে না? তার কেন বিবাহিত পরনারীর ঘরে রাত কাটাতে হলো, তাও উম্মে হানি সেই নারী যাকে মোহাম্মদ পছন্দ করতো এবং বিয়ের জন্য প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তুু নবী মোহাম্মদের চাচা আবু তালিব মোহাম্মদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

এভাবেই নবী মোহাম্মদ ইসলামের নামে নিজের সব খায়েশ মিটিয়ে গিয়েছেন। অনেকে বলে, তাহলে নবী মোহাম্মদ যৌবনে কেন এসব করেন নি? তাদের জানা উচিৎ যে নবী মোহাম্মদ তখন একজন বেকার রাখাল বালক ছিলো। চাচাতো বোন উম্মে হানিকে বিয়ে করতে চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলো। সে নিজেকে নবী দাবি করেছে বা নবুয়তই তো পেয়েছে ৪০ বছর বয়সে, তাও খাদিজার সাথে বিয়ে হওয়ার সুবাদে খাদিজার চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইবনে নওফেলের সান্নিধ্যে আসার মাধ্যমে। মূলত খাদিজাকে বিয়ে করতে পারাটা নবী মোহাম্মদের বিরাট সৌভাগ্য ছিলো। সেটা না হলে নবী মোহাম্মদ না পারতো নবী হতে, না পেতো আর্থিক সাপোর্ট, না পারতো এতোগুলা বিয়ে এবং দাসী সহবত করতে। খাদিজার সাথে থাকাকালীন সময়ে এসব করতে পারেনি তার কারণ সে থাকতো ঘর জামাই এবং খাদিজার টাকায় চলত, তার উপর সে তো তখন নবী হিসেবে গ্রহণযোগ্যতাই লাভ করতে পারেনি এবং তার কোন রাজনৈতিক ক্ষমতাও ছিলো না।

  • Related Posts

    রুমডেট পর্ব -১

    প্রেম হওয়ার ৬ মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো রুমডেটিংয়ে এসে আরিফ এবং ফারহানা পরস্পরকে খুব নিবিড়বন্ধনে জড়িয়ে শুয়ে আছে। বাইরে বৃষ্টি। মাঝেমধ্যে বজ্রপাতের শিহরণ। আরিফ তার খোলা বুক দিয়ে অনুভব করছে ফারহানার হৃদয়কম্পন। এমন সময় আরিফ ফারহানাকে জিজ্ঞেস করে : জান, তুমি কী দেখে আমাকে এত ভালোবাসলে? আমার মধ্যে কীএমন পেয়েছ? ফারহানা ফিসফিস করে উত্তর দেয় : ‘সোনাপাখী তোমার মধ্যে আমি যা পেয়েছি তা হলো—উত্তম চরিত্র। তুমি পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ো।…

    Read more

    হজ্জ ও বিবিধ প্রসঙ্গ

    “মক্কা গিয়ে হজ্জ করিয়ে খরচ করলি যে টাকা সে টাকা গরীবকে দিলে গরীব আর থাকে কেডা,তর ঘরের ধন খা পরে পরে দেশের লোক না খাইয়া মরে সত্যি কথা কথা বললে পরে দেশে থাকতে দিবি না।”  মাতাল রাজ্জাক! প্রত্যেক ধনবান নারী পুরুষের জন্য একবার হজ্জে যাওয়া ফরজ। এখানে ধনবান শব্দটা দিয়ে এটাই নির্দেশ করে যে কিছু মানুষের সামর্থ্য থাকবে না, অর্থাৎ, দুনিয়া নামক পরীক্ষার হলে তিনিই বৈষম্যটা শুরু করেছেন। হজ্জ…

    Read more

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Latest

    আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কি হিন্দু শাক্তদেবী মা-কালীকে উদ্দেশ্য করে লেখা?

    আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কি হিন্দু শাক্তদেবী মা-কালীকে উদ্দেশ্য করে লেখা?

    একেই কি বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?

    একেই কি বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?

    কর্ণচিকিৎসা

    কর্ণচিকিৎসা

    তাকদীর বিষয়ক রেফারেন্স

    তাকদীর বিষয়ক রেফারেন্স
    কুদরত

    পরকাল নিয়ে মুমিনদের বহুল জিজ্ঞেসিত প্রশ্নের জবাব

    পরকাল নিয়ে মুমিনদের বহুল জিজ্ঞেসিত প্রশ্নের জবাব