আমার জানা মতে পৃথিবীতে প্রায় ৪০০০ প্লাস ধর্ম আছে। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে প্রধান ধর্মগুলো বাদে ও কিছু ধর্ম নিয়ে অল্প বিস্তর পড়াশোনা করেছি। তবে দুঃখের বিষয় হলো এই যে, পৃথিবীর বুকে যেই ধর্মটা শান্তির বুলি বলে বেড়ায়, তারা আসলে ভয় ও লোভের ফাঁদে মানুষকে বন্দী করে ফেলে। তখন মানুষের বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। সে তখন আর মানবিক মানুষ হয়ে উঠতে পারে না। হয়ে উঠে পাশবিক।
একটি আরবি হরফ উচ্চারন করলে দশটি নেকি। বেহেশতে গেলে শরাব, হুর,এই আায়াত পড়লে ধন বৃদ্ধি পাবে, ঐ আয়াত পড়লে বিপদ থেকে মুক্তি পাবে। এটা করা হারাম গুনাহ ঐটা করলে জাহান্নামে যাবি। ইত্যাদি ইত্যাদি ভয় ও লোভ।
সবচেয়ে ভয়ংকর যেটা সেটা হলো মুসলিমরা সত্য মানতে ভয় পাই। তাদের ধর্ম নিয়ে কেউ খোলাখুলি আলোচনা করুক সেটা তারা চাই না।আর ভয়ংকরতম বিষয়টি হলো কেউ ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে হত্যা করা। এখানে ও কিন্তু ঐ একই মোটিভ লোভ। বেহেশতের লোভ।
লোভ এবং ভয় উভয় খারাপ। আমরা জানি লোভ মানুষকে আর ও বেশি পাপ কাজে উদ্বুদ্ধ করে। ভয় মানুষকে ট্যাবু বানিয়ে ফেলে। এই কারনে মুসলমানরা সুযোগ পেলে ই পাপ করে। ভয়টা সেখানে পরোক্ষ ভুমিকা পালন করে। যে ছেলেটা বাথরুমে যাওয়ার সময় তার মার কাছে বলে যায়, আম্মু বাথরুমে যায়, সেই ছেলেটাই কোন এক মেয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ভয়ের সাথে অপরাধ প্রবণতার একটা সম্পর্ক আছে। লোভ তো মানুষকে বিপথে পরিচালিত করে।
কোরআন হাদিসের উদ্ধৃতি
1. **সুরা আল-বাকারা, আয়াত ২৮২**:
“আল্লাহকে ভয় কর এবং তিনি তোমাদের শিক্ষা দেন, আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।”
2. **সুরা আলে-ইমরান, আয়াত ১০২**:
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে যথার্থভাবে ভয় কর এবং অবশ্যই মুসলমান অবস্থায় মৃত্যুবরণ কর।”
3. **সুরা আত-তালাক, আয়াত ২-৩**:
“আর যাঁরা আল্লাহকে ভয় করেন, আল্লাহ তাঁদের জন্য উত্তরণের পথ তৈরি করে দেন এবং তাঁকে এমন স্থান থেকে রিযিক দেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।”
হাদিস থেকে আল্লাহকে ভয় সম্বন্ধিত উক্তি:
1. **সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৬৪৮৯**:
“আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহকে সেইভাবে ভয় কর, যেমন ভয় করা উচিত। আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে সর্বজ্ঞ।'”
2. **সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৯৮২**:
“আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য পথ খুলে দেন এবং তাকে এমন রিজিক দেন যা সে কল্পনাও করতে পারে না।'”
3. **তিরমিজি, হাদিস নং ২৪৫৩**:
“আবু যার (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তুমি যেখানে থাকো, আল্লাহকে ভয় কর।'”
1. **সুরা আলে-ইমরান, আয়াত ১৫**:
“বল, আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়ে উত্তম কিছু জানাবো? যারা পরহেজগারি অবলম্বন করে তাদের জন্য তাদের প্রতিপালকের কাছে রয়েছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নদীসমূহ, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে এবং থাকবে পবিত্র সঙ্গী ও আল্লাহর সন্তুষ্টি।”
2. **সুরা আদ-দুখান, আয়াত ৫৪**:
“এভাবে হবে এবং আমি তাদেরকে সঙ্গ দান করবো হুর দিয়ে।”
3. **সুরা আত-তূর, আয়াত ২০**:
“তাদেরকে হুরদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করা হবে।”
4. **সুরা আর-রহমান, আয়াত ৭২**:
“এবং থাকবে সেসব জান্নাতের মধ্যে হুর-ইন, সুন্দর এবং বিশুদ্ধ।”
1. **সহিহ বুখারি, হাদিস নং ২৭৯৬**:
“আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জান্নাতে প্রবেশকারীদের মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য দু’জন করে স্ত্রী থাকবে, এমন হবে যে তাদের অস্থিমজ্জা তাদের মাংসের আড়াল থেকে দেখতে পারা যাবে।'”
2. **সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৮৩৪**:
“আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে, তার জন্য সেখানে এমন স্ত্রী থাকবে যে তাদের সৌন্দর্য দেখলে তার হৃদয় ভরে উঠবে।'”
3. **তিরমিজি, হাদিস নং ২৫৬২**:
“আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জান্নাতবাসীরা জান্নাতে প্রবেশ করলে, তাদের জন্য এমন হুর-ইন থাকবে, যাদের প্রত্যেকটি দেখলে মনে হবে যেন তারা মুক্তার মতো স্বচ্ছ ও সুন্দর।'”
অবশেষে নির্মোহ আল্লাহর এসব বানী মানুষের বানানো বলে মনে হয়। নির্মোহ হলে ভয় ও লোভ দেখাবে কেন? এখন আপনারা ই বলেন