শান্তি বনাম খিলাফত ও ইসলামি শরিয়া

ইসলামি শরীয়া কখনো শান্তি আনতে পারেনি এবং পারবেও না। যেখানে খোলাফায়ে রাশেদীন এবং বড় বড় সাহাবীরা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি, উল্টো মারামারি, হানাহানি, গুটিবাজি নিজেদের মধ্যে বিভক্তির মাধ্যমে স্থায়ী শত্রুতা, নিজেরা নিজেদের হত্যা এমনকি একপার্টির ক্ষমতা শেষে ভিন্নপার্টিকতৃক তাদের কবর থেকে লাশ উঠিয়ে আগুন দেয়া, ক্বাবা ঘরে হামলা, শিয়া- সুন্নী – খারেজি বিভক্তি আরো কত কি!

সেখানে এরা এযুগের কত বড় মুসলিম হলো যে ইসলামি শরীয়া দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে? আল্লাহ যদি থেকে থাকে তবে কেন তাদের প্রতি সহায় হয় না যেখানে উনি কুরআন সেই প্রতিশ্রুতি বারবার দিয়েছেন? আর নয়তো এমন নিরর্থক এবং ক্ষতিকর ইসলামি শরীয়া, যেটা শান্তি নয়, বরং অশান্তি সৃষ্টি করে এবং মানবাধিকার হরণ করে সেটাকে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হোক।

ইসলামি শরীয়া যে শান্তি দিতে পারে না, উল্টো মানবাধিকার এবং নারী অধিকার একদম সংকুচিত করাপূর্বক অশান্তির বন্যায় মানুষকে ভাসিয়ে দেয় তা যুগে যুগে প্রমাণিত হয়েছে।

আমেরিকা বা অমুসলিমদের চক্রান্ত বলাটা এখানে  ভুল যুক্তি।

প্রথমত, খিলাফতের যুগেও সাহাবাদের হাতে ক্ষমতা ছিলো। আবার যেসব ইসলামিক দেশে আমেরিকার কোন প্রভাব নেই সেসব দেশেও শান্তি নেই, এসব অশান্তি চলেই।

এরপরও যারা পুরোপুরি নিজেদের এবং ইসলামের দোষ না দিয়ে তৎকালে ইয়াহুদী এবং বর্তমানে আমেরিকাকে দায়ী করতে চায় তাদের বলবো, ” মানুষকে শয়তান ধোঁকা দেয় বলে কি মানুষের কোন দোষ নেই? তাহলে তো সব মানুষই জান্নাতে যাবে। সবাই আপনাদের মতো কুযুক্তি দেখাবে যেটা আপনারা খেলাফত, সাহাবিদের এবং ইসলামী শরীয়ারকে বাঁচাতে ব্যবহার করেন। যেমন : ” সাহাবারা/ ইসলাম/ আমরা তো নিষ্পাপ, ইয়াহুদি/ আমেরিকা / শয়তানের চক্রান্তে পড়ে সাহাবা খলিফারা এসব করছে ।”

বুঝলেন??? কুযুক্তি দেয়ার বেলায় সাবধান।

ইসলামী শরীয়া বা খিলাফতকে বাঁচাতে যেসব কুযুক্তি দিয়ে থাকেন, সেই একই যুক্তিতে ইসলামের মূল কনসেপ্টই প্রশ্নবিদ্ধ এবং ধ্বংস হয়ে যায়।

ভাবুন, ভাবার প্র্যাকটিস করুন।

References :

1. আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৫ম খন্ড : গাদীরে খুমের ভাষণ ( আহলে বায়াত : https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=38557)

2. হযরত ওমরের চক্রান্ত : http://alhassanain.org/m/bengali/?com=content&id=862

3. ফাতিমা হত্যাকাণ্ড https://bn.m.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0_%E0%A6%97%E0%A7%83%E0%A6%B9%E0%A7%87_%E0%A6%89%E0%A6%AE%E0%A6%B0

4.আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৭ম খন্ড : পরিচ্ছেদ : জামেলের যুদ্ধ, ওমর হত্যা, উসমান হত্যার ঘটনা, সিফফিনের যুদ্ধ, সালিশি ঘটনা ( মুয়াবিয়ার চক্রান্ত), খারেজি সম্প্রদায়ের উদ্ভব, দুমাতুল জানদালে সালিশদ্বয়ের উপস্থিতি, আলীর বিরুদ্ধে খারেজীদের বিদ্রোহ, খারেজিদের বিরুদ্ধে আলীর অভিযান, আলী হত্যার ঘটনা

5.১০ম খন্ড – মারওয়ান হত্যার বিবরণ, আব্বাসীরা খেলাফত পাওয়ার পর উমাইয়াদের লাশের সাথে নৃশংসতা

  • Related Posts

    হেরেম-সংস্কৃতি কি ইসলাম বিরোধী?

    সুলতান সুলেমান সিরিয়াল দেখেছেন? একটা ব্যাপার কি কখনো খটকা লেগেছে—যে সুলতান এত ইসলামী আইন মান্য করছেন, ছদ্মবেশে বাজারে বাজারে গিয়ে কেউ ভেজালপণ্য দিচ্ছে কিনা, কেউ ওজনে কম দিচ্ছে কিনা তা তদারকি করছেন, সমকামিতার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছেন, সেই সুলতানই কিনা তাঁর হেরেমে বিবাহ-বহির্ভূত যৌনতায় লিপ্ত হচ্ছেন! বিষয়টি কি আপনার কাছে স্ববিরোধী মনে হয়? আসলে বিষয়টি মোটেও স্ববিরোধী নয়। আপনি জানেন না বলেই আপনার কাছে স্ববিরোধী মনে হয়েছে। হেরেমসংস্কৃতি ইসলামী শাসনব্যবস্থার…

    Read more

    আইয়্যামে জাহেলিয়ার নামে মিথ্যাচারের জবাব :

    ইসলামকে গ্লোরিফাই করার জন্য মুসলিমরা যেই মিথ্যাচারগুলো করে থাকে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আইয়্যামে জাহেলিয়া।  তারা এটাকে নিয়ে এমনভাবে অপপ্রচার  চালায় যেন মনে হয় ইসলাম আসার পূর্বে বুঝি আরবে, এমনকি পৃথিবীতে জ্ঞান বিজ্ঞান বা সভ্যতা বলতে বুঝি ছিলো না। এটা নিয়ে সাধারণত যে ৪ ধরনের অপপ্রচার হয় তা হলো : ১. ইসলামের পূর্বে পুরো পৃথিবী আইয়ামে জাহেলিয়া ছিলো  ২. ইসলামের পূর্বে সমগ্র  আরবে আইয়ামে জাহেলিয়া ছিলো ৩. ইসলামের পূর্বে …

    Read more

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Latest

    আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কি হিন্দু শাক্তদেবী মা-কালীকে উদ্দেশ্য করে লেখা?

    আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কি হিন্দু শাক্তদেবী মা-কালীকে উদ্দেশ্য করে লেখা?

    একেই কি বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?

    একেই কি বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?

    কর্ণচিকিৎসা

    কর্ণচিকিৎসা

    তাকদীর বিষয়ক রেফারেন্স

    তাকদীর বিষয়ক রেফারেন্স
    কুদরত

    পরকাল নিয়ে মুমিনদের বহুল জিজ্ঞেসিত প্রশ্নের জবাব

    পরকাল নিয়ে মুমিনদের বহুল জিজ্ঞেসিত প্রশ্নের জবাব